নিউজ ডেস্ক ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:৪০:৪৩ খুলনার চিত্র
শেখ হাসিনা এবং পরিবহন সেক্টর নিয়ন্ত্রণকারী তার দোসররা পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন মাফিয়ারা এই সেক্টর দখল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গণপরিবহন সংস্কার জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘সড়ক পরিবহনে চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধ এবং প্রকৃত মালিক-শ্রমিকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়েছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে তার অনেক দোসরও পরিবহন সেক্টর থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। তারা পালিয়ে যাওয়ার পর পরিবহন সেক্টর নতুন মাফিয়ারা দখল করেছে। বিগত সময় আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে লড়াই করেছি, এখন একইভাবে পরিবহন সেক্টরের মাফিয়াদের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই চলবে।
তিনি বলেন, টিআইবি এই বছরের শুরুতে একটা রিপোর্টে বলেছিলো- প্রতি বছর পরিবহনখাত থেকে ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা চাঁদা তোলা হয়। সেই চাঁদার ভাগ গণভবনের নেতা থেকে শুরু করে ফুটপাতের নেতারাও পায়। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, দেশে কোনো চাঁদাবাজি চলবে না। আমাদের অবস্থান চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। চাঁদাবাজ-মাফিয়ারা কোনো দলের না, তারা সুবিধাভোগী। পরিবহন মালিক সমিতিতে যেন প্রকৃত মালিকরা নেতৃত্বে থাকে, সেজন্য নতুন করে ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। একই সাথে দুর্বৃত্তরা যেন নেতৃত্বে আসতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার জন্য কত পরিকল্পনা করা হলো, কিন্তু বাস্তবে কিছুই না। প্রতিদিন জ্যামে মানুষের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। যানজট নিরসনে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ব্যবস্থা নিন। পরিবহনখাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা বার বার বলছি- শুধু ভোটের জন্য মানুষ জীবন দেয়নি, তাই সবকিছুতেই শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের এই সভাপতি বলেন, সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তেল সিন্ডিকেটকারীরা পরিকল্পিতভাবে মাল সরিয়ে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি করেছিল। সরকার সিন্ডিকেটের কাছে যদি জিম্মি হয়, তাহলে সামনে আরও সিন্ডিকেট তৈরি হবে। সরকার সিন্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দাম বাড়িয়েছে। সরকারের উচিত, তেল আমদানিকারী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। আমার ধারণা, সরকারের ম্যানেজমেন্ট একের পর এক ফেল করছে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হওয়ার পরও পরিবহনখাতে নৈরাজ্য থামেনি, সিন্ডিকেটের শুধু হাত বদল হয়েছে। এখনও একটা বিশেষ গোষ্ঠী পরিবহনখাতে নৈরাজ্য করার চেষ্টা করছে। কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে যেন পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য বিরাজ করতে না পারে, সেজন্য মালিক-শ্রমিকদের সমন্বয়ে পরিবহন মালিক সমিতির কমিটি করতে হবে।
গণপরিবহন সংস্কার জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবহন মালিক সমিতির সোহরাব হোসেন, ব্যারিস্টার সাজ্জাদ চৌধুরী শিহাব, মাহতাবউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ফারুক মোল্লা, তোফাজ্জল হোসেন, রফিকুল হোসেন কাজল, মেজর জাহাঙ্গীর আলম, মাহমুদ হোসেন, সবুজ শিকদার, শ্রমিক নেতা সোহেল রানা সম্পদ, আরিফুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, রাসেল খোকন, এসএম পারভেজ, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. আমির হোসেন, আলমগীর হোসেন, জুয়েল রানা আরিফ প্রমুখ।