আজ || শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
শিরোনাম :
  সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার দুর্নীতিবাজ সাইফুলকে জেলা প্রশাসক পদ থেকে প্রত্যাহারের দাবি       টানা তিন জয়ে শ্রীলঙ্কাকে সিরিজ হারাল বাংলাদেশ       মৃত দাদির জন্য খাটিয়া বহনকালে ট্রাকের ধাক্কা, নাতিসহ নিহত ৩       বিএসএফের গুলিতে নিহত জয়ন্তর মরদেহ ফেরত       গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দিলো বিএসএফ       পরিকল্পনা বদলে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারকে ৬টি প্লট দেয় রাজউক       পেট্রোবাংলায় তিতাসের কর্মীদের হামলা-ভাঙচুর       সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত       ফকিরহাটে পিকআপ-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৪       ঠাকুরগাঁওয়ে বিএসএফের গুলিতে জয়ন্ত কুমার নামে বাংলাদেশির মৃত্যু    
 


যেমন চলছে জীবন

জীবন স্থবির, পড়াশুনা নেই, টিচিং বন্ধ, অনলাইনে কিছু টিচিং চললেও নানামুখী কারণে এখানে সকলের প্রবেশ নিশ্চিত হচ্ছে না। ফলে পড়াশুনা নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা ভিতরে ভিতরে আছে। একজন অভিভাবক হিসেবে আমার ভাবনা, আগে করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি, তারপর লেখাপড়া। কারণ আগে জীবন তারপর অন্যকিছু। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমার সন্তানকে সুস্থ রাখতে পেরেছি কিনা সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সন্তানের স্বাস্থ্যবিধি মনিটরিং করা থেকে তার প্রতিদিনের জীবনযাপন নজরে রাখতে হয়েছে। তার আনন্দপুর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে নিয়মিত টেলিভিশন দেখার সুযোগ দিতে হয়েছে, ল্যাপটপ চালাতে নিষেধ করতে পারিনি, নেট দুনিয়ায় বিচরণ করা থেকে বিরত রাখতে পারিনি। ছাদে ঘুড়ি ওড়ানো ছিল একেবারেই নিয়মিত কাজ। প্রতিদিন গড় ২০ টি ঘুড়ি তৈরি করেছে। এজন্য কাগজ সংগ্রহ, সুতা ক্রয় সবকিছুতে আমাকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করতে হয়েছে। ঘূড়িও কেটেছে সমানতালে, হারিয়ে যাওয়া ঘুড়ি কোনদিন খোজ করা হয়নি। বাসায় তার ইচ্ছেমত খাবার তৈরি করতে হয়েছে। এরমধ্যে কোমল স্বরে মাঝেমধ্যে পড়তে বলার পর কিছুটা পড়াশুনা হয়েছে। এভাবেই চলছে করোনা পরিস্থিতিতে আমার সন্তানের জীবন। আমাদের জীবন চলেছে আরও স্থবির। বিশেষ করে আমি ডায়াবেটিস রোগী। প্রতিদিন নিয়ম করে হাটা একেবারেই বন্ধ। যারা হাটতেন আমার সাথে, তারাও যেতে চায়নি। খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনে হুট করে আসা পরিবর্তন জীবনকে স্বস্তি দেয়নি। বিরক্তি, ভোগান্তি, অতৃপ্তি, হতাশা, বিষাদের কালো থাবা গ্রাস না করলেও শান্তির সাথে বসবাস ছিল না। স্ত্রী খুব সচেতন মানুষ, ঘন ঘন হাত ধোঁয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সে ছিল সাংঘাতিক মনিটর। গরম পানি খাওয়ার অভ্যাস ছিল মেডিসিন খাওয়ার মত। লেবুসহ অন্যান্য ফলমুল খাওয়ার বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যাকে অন্যকিছু অতিক্রম করতে পারেনি। ঘুম তো ছিলই না, টিভি দেখা আর গল্প আড্ডায় কেটে যেত সময়। বেশিরভাগ দিন ভোরে ঘুম আসতো। এই কঠিন সময় যারা কথা বলে, পরামর্শ দিয়ে আমাদের সতেজ রাখার চেষ্টা করেছেন তার মধ্যে বেতার বন্ধু কুমিল্লার সোহাগ পারভেজ, কুড়িগ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার, কপিলমুনির আরশাদ আলি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জের বিধান চন্দ্র টিকাদার, সিলেটের দিদারুল ইকবাল, চান মিয়া, বগুড়ার ওমর ফারুক, ঝিনাইদহের সাখাওয়াত হোসেন বিদ্যুৎ, ভারতের গিয়াসউদ্দিন, সবুজ বিশ্বাস, যশোরের আব্দুল করিম, দিনাজপুরের মেনহাজুল ইসলাম, সৌদির জিএম মুস্তাফিজুর রহমান, কাতারের হারুন খান, সিদ্দিক গাজী, আমেরিকার সুলতান আহমেদ, চীনের জিএম আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রামের তনুশ্রী ঘোষসহ বহুজনের নাম উল্লেখযোগ্য। যাপিত জীবনের এই সময়ে আরও সময় কেটেছে গ্রামের বাড়ি গরুর খামার দেখে, ঘাসের জমিতে কাজ করে। সামনে আর কতদিন করোনার ভয়াল অবস্থা থাকবে তা কেবল দিন দুনিয়ার মালিক জানেন। আমরা সুস্থ থাকতে চাই, ভাল থাকতে চাই, ভাল রাখতে চাই। আসুন সচেতন ও সজাগ থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করি। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল, তাদের প্রতিদিনের আপডেট নেওয়া ছিল রুটিনমাফিক কাজ। সহকর্মীদের সাথেও ছিল ভাল যোগাযোগ। প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব, সুহৃদ সবার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এতসবের পরও মাঝে মধ্যে অসুস্থ হয়েছি, সুস্থ হয়েছি। নিজের বেতনভাতায় গরীব অসহায় মানুষের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার টাকার খাদ্যসহায়তা দিয়েছি। এভাবেই চলমান জীবন এই করোনা পরিস্থিতিতে। তবু্ও চলছে জীবন আগামীর দিকে…..


Top