প্রতিষ্ঠার ৩২ বছরেও কমিটি কিংবা শিক্ষকরা জানেননা স্কুলের জমির ঠিকানা। এ যেন কাজীর গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নেই। ঘটনাটি তালা সদরের মধ্য আটারই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
সূত্র জানায়, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৮৯ সালে। প্রতিষ্ঠাকালীণ স্কুলের নামে মোট ৫টি খতিয়ানে ৭টি দাগের মধ্যে ৩৬ শতক জমি দান করেন দাতারা। এরপর দু’যুগ পর ২০১৩ সালে সরকারীকরণ হয় স্কুলটির। এরপরও পেরিয়ে গেছে ৮টি বছর। তবে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি কিংবা শিক্ষকদের কেউ খোঁজ রাখেননা স্কুলের মূল সম্পত্তির পরিমাণ কত এবং তার অস্তিত্ব কোথায়? মূলত স্কুলটির মূল ভবন রয়েছে ৭ শতক জমির উপর। বাকি ২৯ শতক জমি বিলাঞ্চলে। তবে প্রতিষ্ঠার ৩২ বছরেও স্কুল তার নামীয় বাকি ২৯ শতক জমির দখলে নেই। কারা দখল করছে কিংবা কোন শর্তে তারও হিসাব নেই কারো কাছে। স্কুলের সামনে যে, খেলার মাঠটির অস্তিত্ব তাও অন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানের।
সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালে স্কুলটি সরকারীকরণের সময় শুধুমাত্র কাগজ-কলমে এর মূল জমির অস্তিত্ব উপস্থাপন করেন কর্তৃপক্ষ। দখলে যাওয়ার প্রয়োজনও মনে করেনি কেউ। তবে বিষয়টি আলোচনায় আসে সম্প্রতি। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে হরিকৃষ্ণ মুনি বদলী নিয়ে আসলে তিনিও খবর নেওয়ার চেষ্ঠা করেননি বিষয়টি নিয়ে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান লাগোয়া মসজিদের সীমানার একটি গাছ কর্তনের বিষয় সামনে আসলে নজরে আসে স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের। খবর নিতে ঘটনাস্থলে গেলেই উঠে আসে মূল বিষয় যে, গাছের মূল জায়গা স্কুলের নয় ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। কৌতুহল বশত সংবাদকর্মীদের তথ্যানুসন্ধানে উঠে আসে যে, মধ্য আটারই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামীয় আটারই মৌজায় ৪৭২, ১৬৯, ৬২৭, ৯০৮ ও ৩৪৭ খতিয়ানের ২০৪৩, ২০৪৬, ২০৪৭, ২৭৫৩, ১৯৯৭, ৯৯১ ও ৯৫৭ দাগের মধ্যে ৩৬ শতক জমির রেকর্ড হয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীণ যা এর দাতা গোষ্ঠীর ৪ জন সদস্য দান করে গেছেন। তবে ২০৪৬ দাগের মধ্যে মাত্র ৭ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠা পায় বিদ্যালয়ের মূল ভবন। বাকি ২৯ শতক জমিতে কখনও বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব ছিলনা। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, দাতাগোষ্ঠীর ওয়ারেশরা উক্ত সম্পত্তি সেই প্রথম থেকেই দখলে রেখেছেন। যা আজও বিদ্যমান।
এব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিকৃষ্ণ মুনির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তৎকালীণ প্রধান শিক্ষক তাকে ঐ সম্পত্তির দখল বুঝে দিয়ে জাননি কিংবা তারও জানা নেই জমির প্রকৃত অস্তিত্ব কোথায়। এনিয়ে কথা হয় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনন্দ মজুমদারের সাথে। তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, তিনি সম্প্রতি সভাপতি হয়েছেন। এব্যাপারে তার বিস্তারিত জান নেই। সকলের সাথে বিষয়টি শেয়ার করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে তিনি সাথে সাথে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছেন। এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের অনুকুলে সকল প্রকার কাগজপত্র চেয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন।