বাহুবলী থেকে পুষ্পা বা হাল আমলের আরআরআর বা কেজিএফ ২ বলিউডকে যেন পাত্তাই দিচ্ছে না এই দক্ষিণী সিনেমাগুলো। কেন এমন অবস্থা? তার কারণ ব্যাখ্যা করলেন কেজিএফ ২ অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডন।
রাভিনার মতে হলিউডের ছবিকে নকল করতে গিয়েই ডুবছে বলিউড। হলিউডের অন্ধ অনুকরণ মানুষ ভাল চোখে দেখছেন না।
তবে দক্ষিণের ছবির সাফল্যের রহস্যও জানালেন তিনি। তার মতে, দক্ষিণের ছবি তৈরি হয় দেশীয় গল্পের উপর ভিত্তি করে। এর ফলে দর্শকরা নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারেন গল্পের সঙ্গে।
এ প্রসঙ্গে তিনি নব্বই দশকের বলিউড ছবির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। রাভিনা বলেন, ওই সময় পর্যন্ত গান ও গল্পে ছিল দেশীয় ছোঁয়া। তারপর থেকে হলিউডেকে নকল করা শুরু হয়। বলিউড ছবিতে পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রভাব, নায়কের বা ভিলেনের হেলিকপ্টারে যাতায়াত—এ সব আরও দূরে সরিয়েছে ভারতীয় দর্শককে।
অন্য দিকে, দক্ষিণী ছবিতে দেশের গল্প, দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া থাকার ফলে মানুষের মধ্যে তার আকর্ষণ বাড়ছে। এমনকি হিন্দিভাষী ভারতীয়রাও দক্ষিণের ছবি দেখতে হলে ভিড় করছে।
রাভিনা নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমি নিজেও যখন বলিউডের স্ক্রিপ্ট পড়তাম, তখন বুঝতে পারতাম কোথাও যেন গল্পগুলো আলাদা হয়ে যাচ্ছে। দেশের সংস্কৃতি এবং ভাবনার সঙ্গে মিলছে না।
রাভিনা মনে করেন, হাল আমলে বলিউড ছবির পশ্চিমীকরণের শুরু হয়েছে যশরাজ এবং ধর্মা প্রোডাকশনসের হাত ধরে। দুটিই বর্তমানে বলিউডে সবচেয়ে বড় প্রোডাকশন হাউস। একটা সময় অবধি মানুষ তাদের প্রযোজিত ছবিগুলো পছন্দ করেছেন। কিন্তু লাগাতার পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রাধান্যে দর্শক দূরে সরেছেন সেই ধরনের ছবিগুলো থেকে।
আয়ের অঙ্কেও সম্মিলিত দক্ষিণী চলচ্চিত্র (তেলুগু, তামিল ও মালায়লাম) বলিউডকে ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০২১ সালে বক্স অফিসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে তেলুগু সিনেমা।
রাভিনা বলেন, দক্ষিণী ছবির বিষয়বস্তু বেছে নেওয়া হয় বৃহৎ অংশের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। আল্লু অর্জুনের ‘পুষ্পা’র কথাই ধরা যাক। এই ছবির বিষয়বস্তু একেবারেই অনন্য। গল্প বলার পদ্ধতিতেও নিজস্বতা রয়েছে। শুধু বিষয়বস্তু নয়, দক্ষিণী অভিনেতাদেরও মন ছুঁয়ে যাচ্ছেন দর্শকের। অভিনেতার স্টাইলও সাফল্যের একটি অন্যতম অংশ। যে স্টাইলের শুরু করেছিলেন রজনীকান্ত, তা বজায় রেখেছেন তেলুগু তারকা আল্লু অর্জুন, প্রভাস, মহেশ বাবু, জুনিয়র এনটিআর এবং রাম চরণ।