আজ || শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
 


সাতক্ষীরায় মরহুম স্বামীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবিতে বৃদ্ধা স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে নিহত হওয়া সাতক্ষীরার রসুলপুরের খলিলউল্লাহ খানকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান, সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর এলাকার মরহুম খলিলউল্লাহ খানের স্ত্রী বৃদ্ধা মোছাঃ আক্তার বানু খানম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যুদ্ধের আগে আমার স্বামী খলিলউল্লাহ খান বৃটিশ সেনা সদস্য ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ গ্রহণ করেন। যুদ্ধকালিীন সময়ে ১৯৭১ সালের ১৩ মে সাতক্ষীরায় পাক সেনারা তাকে আটক করে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। সে সময় তার মৃতদেহ কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও আজও তার নাম মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে ও শহীদ পরিবার ভুক্ত করা হয়নি।
আক্তার বানু খানম বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই শুরু হলে ২০১৯ সালের ২২ নভেম্বর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর আমি একটি লিখিতভাবে আবেদন করি। আমার ওই আবেদনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু ও সদর উপজেলা কমান্ডার হাসানুল হক সুপারিশ করেন। এর পরও আমার স্বামী খলিলউল্লাহ খানের নামটি দেশের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় স্থান পায়নি। মধ্য বয়সে স্বামীকে হারিয়ে অতিকষ্টে সন্তানদের মানুষ করেছি এই সান্তানা নিয়ে যে, আমার স্বামী দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। অথচ আজ ৫০ বছর পার হয়ে গেলেও তিনি এখনো শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী দেশমাতৃকার টানে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধার জন্য প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করেন। আমার স্বামীর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারি আব্দুল মঈদ খান চৌধুরী ও বাবুল খানসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আমার শহীদ খলিলউল্লাহ খানের স্মৃতিচারণ করেন। স্বাধীনতার এত বছর পরও তার শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না মেলায় তারা হতাশা ব্যক্ত করেন। তারাও এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবি জানান। দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গকারি সেই মানুষটি এতটুকু সম্মান আজও কেন দেয়া হলো না এবিষয়ে সাতক্ষীরার জনপ্রতিনিধিসহ উর্দ্ধতন মহলের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আক্তার বানু খানম আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমানে আমার বয়স প্রায় ৯০ বছর। মৃত্যুর আগ মুর্হুত্বে হলেও তিনি তার স্বামীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিটুকু দেখে যেতে চান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের এই উপেক্ষিত সৈনিক তার স্বামী মরহুম খলিলউল্লাহ খানকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবিতে সাতক্ষীরার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তার সাথে সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন।


Top