খুলনা বিভাগে করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজারে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে খুলনা জেলা। গতকাল শনিবার পর্যন্ত এ জেলায় করোনার রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৫ জন। পাশাপাশি শঙ্কামুক্ত অবস্থায় রয়েছে মেহেরপুর জেলা। যেখানে এখন অবধি করোনা রোগী ৯২ জন। বিভাগে করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ৮৬ জন। যা আক্রান্ত ৫ হাজার ২৪০ জনের তুলনায় শতকরা ১.৬৪ ভাগ। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল এই সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার মধ্যে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে খুলনা জেলা। কারণ খুলনা জেলায় জনবসতি বেশি। এছাড়া কর্মক্ষম লোকের আনাগোনাও অনেক।
এদিকে সরকারি ভাবে লকডাউন বা রেডজোন ঘোষণা করা হলেও খুলনা জেলার বাসিন্দারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয় কম। যার ফলে দিনে দিনে খুলনায় করোনা রোগী বাড়ছে। এছাড়া গত ঈদুল ফিতরের ছুটির পর থেকেই খুলনায় করোনা রোগী বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন খুলনা জেলা প্রশাসক।
অপরদিকে মেহেরপুর জেলা মাত্র দুইটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। সেখানে জনসংখ্যাও তুলনামূলক কম। স্থানীয় প্রশাসন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে সেখানে খুব শক্ত অবস্থান থাকায় শুরু থেকেই জেলাটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোর তুলনায় কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রটি আরও জানায়, চলতি বছরের ১০ মার্চ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত খুলনা বিভাগে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ২৪০ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫৭৭ এবং সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৮৩ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে খুলনা জেলায় রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৬৪ জন, যশোর জেলায় ৭৪৮ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ৭০৮, ঝিনাইদহ জেলায় ২৬৪, নড়াইল জেলায় ২৫৭, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২৩৯, বাগেরহাট জেলায় ২০০, সাতক্ষীরা জেলায় ১৯৯, মাগুরা জেলায় ১৬৯ এবং মেহেরপুর জেলায় মাত্র ৯২ জন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ মনজুরুল মুরশিদ বলেন, খুলনা জেলায় সবথেকে বেশি করোনা রোগী হওয়ার কারণ হল এখানে জনবসতি বেশি। নিয়ন্ত্রণ বা সামাজিক দূরত্ব কম। অথচ মেহেরপুর জেলায় প্রথম থেকেই সামাজিক দূরত্বে বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকায় পজেটিভ রোগী কম পাওয়া যাচ্ছে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ জানান, খুলনা জেলা এখনই লকডাউনসহ প্রয়োজনে কার্ফু দিতে হবে। তা না হলে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে।
খুলনা জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গঠিত কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ঈদের পর থেকে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের লোকজনসহ অন্যান্য জেলা থেকে খুলনায় মানুষ প্রবেশ করায় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।