পাওনা টাকা চাওয়ায় আল মামুন (৩৩) নামে এক চাল মিস্ত্রিকে প্রথমে ঘের আসাদের ম্যানেজার পরবর্তিতে অফিসে ডেকে এনে গেট আটকিয়ে ঘের আসাদের নির্দেশে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সামনেই নির্দয়ভাবে পিটিয়ে আহত করল ঘের আসাদের পোষা বাহিনীরা।
পোষা বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পায়নি আল মামুনের বৃদ্ধ বাবা-মাও। নির্যাতনের এক পর্যায়ে আল মামুন ও তার বৃদ্ধ বাবা অচেতন হয়ে পড়লে তাদের অফিসের মধ্যেই আটকিয়ে হাই এন্টিবায়েটিক ঔষধ ও সেলাইন দিয়ে প্রায় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর ছেড়ে দিলে তাদেরকে বাড়ীতে নেওয়া হয়। এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে কেশবপুরের বিতর্কিত মৎস ঘের ব্যবসায়ী আসাদের শহরের বায়সার মোড়ের নিজস্ব অফিসে। নির্যাতনের শিকার চাল মিস্ত্রি আল মামুন বর্তমানে কেশবপুর হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছে।
এলাকাবাসী ও হাসপাতালে ভর্তি চাল মিস্ত্রি আল মামুনের পিতা উপজেলা মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কুতুবুদ্দিন মোড়ল সাংবাদিকদের জানান, তিনি প্রায় ১৭ বছর যাবৎ ঘের আসাদের মৎস্য ঘেরের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন।
মাগুরাডাঙ্গা, খতিয়াখালি ও গড়ভাঙ্গা ঘেরের টোঙ ঘর তৈরি বাবদ তার ছেলে আল মামুন ঘের আসাদের কাছে ১৫ হাজার ৫শ টাকা পায়। গত সোমবার আসাদের ঘেরের প্রধান ম্যানেজার ওহেদুজ্জামান নুনুর কাছে উক্ত পাওনা টাকা চায় তার ছেলে মামুন। এই পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে নুনু ও তার পোষা বাহিনীরা কেশবপুর শহরের আব্দুল খাঁর মোড়ে ফেলে তার ছেলেকে বেদম মারপিট করে আহত করে। ঘটনা জানাজানির পর আসাদ তাকে বলেন তার ছেলেকে নিয়ে কেশবপুরস্থ অফিসে আসতে। সেখানে বসাবসির মাধ্যমে মিমাংসা করে দিব।
আসাদের কথামত তিনি ও তার স্ত্রী আকলিমা বেগম ছেলে আল মামুনকে নিয়ে পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে আসাদের অফিসে যায়। অফিসে ঢুকতেই আসাদের নির্দেশে গেট লক করে তার পোশা বাহিনী সুমন, নুনু, কালাম ও জায়েদ মিলে ছেলে আল মামুনকে পেটাতে থাকে। ছেলে বাঁচাতে তিনি ও তার স্ত্রী ঠেকাতে গেলে পোষা বাহিনীরা তাদেরকেও এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে তাদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি ও তার ছেলে ঘটনাস্থলে অচেতন হয়ে পড়ে।
আল মামুনের মা আকলিমা বেগম বলেন, স্বামী ও ছেলে অচেতন হয়ে পড়লে ঘের আসাদ স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে তাদেরকে সেলাইন ও হাই এন্টিবায়েটিক ঔষধ দিয়ে তার অফিসে প্রায় ৫ ঘন্টা আকটিয়ে রাখার পর তাদের মুক্ত করে দিলে বাড়ীতে নিয়ে যায়। বাড়ীতে গিয়ে ছেলের জ্ঞান ফেরার পর সে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার রাতে তাকে কেশবপুর সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।