সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুতায় নামার চেষ্টা করলে কেউ পার পাবে না বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন র্যাবের নতুন মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। রবিবার দুপুরে খুলনায় র্যাব-৬ এর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। দুপুরে হেলিকপ্টারে করে তিনি খুলনায় এসে পৌঁছান।
এ দিকে, ২৫ জুন থেকে ২৮ জুন সকাল সাতটা পর্যন্ত টানা ৫৭ ঘণ্টা সুন্দরবনে র্যাব-৬ সদস্যদের সঙ্গে বনদস্যুদের গোলাগুলি হয়েছে। এতে তিন বনদস্যু নিহত হন। পাঁচ বনদস্যুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত দুজনকেও উদ্ধার করা হয়।
নিহত দস্যুরা হলেন- সাতক্ষীরার হরদহ এলাকার শরিফুল ইসলাম (২৪), আশাশুনি উপজেলার বসুখালীর হাবিবুর রহমান (২৪) ও অজ্ঞাত (২৫) একজন। এছাড় া আটক দুজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
প্রেসব্রিফিংয়ে জানানো হয়, র্যাবের এ অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৩টি গুলি, ১৭টি গুলির খোসা এবং বিপুলসংখ্যক দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এসব ঘটনার পরপর খুলনার র্যাব-৬ এর কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে বাহিনীটির নতুন মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুতায় কেউ নামার চেষ্টা করলে তাদের পরিণতি এরকমই হবে।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৩১ মে মাস্টার বাহিনীর প্রধান মাস্টারের আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করার অগ্রযাত্রার সূচনা হয়। এরপর একে একে সুন্দরবনে দস্যুবৃত্তিতে থাকা ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য বিপুলসংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার করে। সরকার তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে সহযোগিতা করে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষদের জীবিকায়ন, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে এলিটফোর্স র্যাব সব সময় কাজ করে যাবে।
সুন্দরবনের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় যাতে নতুন করে কোন দস্যু বাহিনী গড়ে উঠতে না পারে, সেজন্য র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান বাহিনীটির প্রধান।
এসময় র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওশনুল ফিরোজ বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। সম্প্রতি সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে দস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার গোয়েন্দা তথ্যেরভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তরের সহযোগিতায় গত ২৫ জুন সুন্দরবনের দশ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় কর্ডন করে র্যাব-৬ ‘কর্ডন অ্যান্ড সার্চ কম্বিং’অপারেশনে নামে। হেলিকপ্টারসহ দ্রুতগামি আধুনিক নৌযান ব্যবহার করে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। র্যাবের আলাদা আলাদা টিম করে সুন্দরবনের গহীণে দুঃসাহসিক অভিযান চলে ২৮ জুন সকাল সাতটা পর্যন্ত টানা ৫৭ ঘন্টা। এই ঘটনার বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ারসহ বাহিনীটির কর্মকর্তারা।