সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ৮৯ নং ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণে বাধা ও স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। পাশর্^বর্তী কুমিরা গ্রামের আব্দুস সোবহান বিশ^াস এবং তার পুত্র শহীদ বিশ^াস দুর্গাপূজার দশমীর দিনে উক্ত জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যানিজেং কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল হামিদ এবং প্রধান শিক্ষক এস এম জাকিউর রহমান।
লিখিত অভিযোগে তারা জানান, তালা-পাটকেলঘাটা সড়ক সংলগ্ন ভাগবাহ গ্রামে ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হয় ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০০৮-২০০৯ অর্থ বছরে স্কুলের একটি ভবন নির্মিত হয়। উক্ত স্কুল নির্মাণের জন্য উত্তর পাশে জায়গা স্বল্পতা এবং স্কুলের পরিবেশ সুন্দর রাখার স্বার্থে ০.০২৫০ একর জমির প্রয়োজন হয়। এ সময় এলাকাবাসী, এসএসসি, অভিভাবক ও শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তায় ৩০ হাজার টাকা জমির দাম নির্ধারণ করে কুমিরা গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দীন বিশ^াসের পুত্র আব্দুস সোবহান বিশ^াসের নিকট হতে উক্ত জমি খরিদ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ সময় ২২ হাজার টাকা বায়নাপত্র করা হয়। তবে এ সময় উক্ত জমি রেজিষ্ট্রি করার জন্য একাধিকবার এসএমসি সদস্যবৃন্দ তাদের বাড়িতে ধর্ণা দিলেও অজ্ঞাত কারণে তারা উক্ত জমি রেজিষ্টি করে দেয়নি। তিনি পরবর্তীতে বাকি ৮ হাজার টাকাও নেননি, কিংবা ২২ হাজার টাকাও স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফেরৎ দেননি। জমি বায়না করার প্রায় তিনমাস পরে তিনি জানান, এখন বায়না পত্রের কোন গুরুত্ব নেই তাই উক্ত জমি রেজিষ্ট্রি করে দিবেন না।
এদিকে দুর্ঘটনার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা ও বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য সরকার চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়। প্রাচীরের কাজও শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে স্কুলের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে প্রাচীর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় পাশর্^বর্তী কুমিরা গ্রামের আব্দুস সোবহান বিশ^াস এবং তার পুত্র শহীদ বিশ^াস। এ সময় তারা স্কুলের জমি দখলে নিয়ে সেখানে দোকান নির্মাণ করে। বাধা দিতে গেলে তারা হুমকি ধামকি প্রদান করে।
এদিকে কুমিরা গ্রামের আব্দুস সোবহান বিশ^াস জানান, তারা কোন স্কুলের জমি দখল করেননি। নিজেদের জমিতেই দোকান নর্মাণ করছে বলে দাবী করেন তিনি।
তালা উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) শেখ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, দুর্গাপূজার দশমীর দিনে স্কুলের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে একটি মহল। পরবর্তীতে উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে উক্ত দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়। স্কুলের জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমীন জানান, ভাগবাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মাণে বাধা ও বিদ্যালয়ের জমি দখল প্রচেষ্টা বিষয়ক অভিযোগ অবগত হয়েই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে। তিনি আরও জানান, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় আইনগত সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।