আজ || শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম :
 


ডুমুরিয়ায় বেগুনের চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ইমন ইসলামসহ অনেকেই

ডুমুরিয়ায় বেগুন চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ইমন ইসলামসহ অনেকেই। খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মোট ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে আটলিয়া ইউনিয়নের ভরাতিয়া গ্রামের  মানুষ সাধারণত সারা বছরে এ সব ফলনের উপর নির্ভরশীল। তা দিয়ে চলে তাদের জীবন জীবিকা। যে সব কৃষকের নিজস্ব জমি নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষ করে শতাধিক পরিবার নিয়ে সচ্ছল ভাবে জীবন-জীবীকা করছে। 

এ অঞ্চলের কৃষকরা সারা বছরেই বিভিন্ন মৌসুমে সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাঁকা। খুচরা পাইকারী ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বেগুন ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলার বাজার গুলোতে খুচরা বিক্রি করেন। বর্তমানে কৃষক-কৃষানী কেউ ঘরে বসে নেই। সবাই জমিতে বেগুন তোলা ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন । বেগুন চাষ করে এ অঞ্চলের শত শত কৃষক-কৃষানী স্বাবলম্বী হয়েছেন।

পঙ্কজ কুন্ডু, ডেলভিটা, কালিকাপুর, সুরেস্বর মল্লিক, কুলবাড়িয়া, আসাদুজ্জামান, কুলবাড়িয়া, কামাল বাওয়ালী, শোভনা, নিউটন মন্ডল, আমভিটা, ইমন হোসেন, সাহস, রামকৃষ্ণ মল্লিক, বরাতিয়াসহ আরো অনেক কৃষক-কৃষানী ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বেগুন চাষে ঝুকে পড়েছেন। তবে খরিপ-২ (বর্ষা মৌসুমে) বেগুনের বাম্পার ফলন হলেও বেগুনের বাজার দর কম থাকা এবং কিছু কিছু বেগুন ক্ষেতে ডগা ছিদ্রকারী পোঁকা আক্রমনের ফলে কৃষকরা দুচিন্তায় পড়েছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলতি খরিপ-২ (বর্ষা মৌসুমেও) কোন জমি আর পতিত নেই বিস্তৃর্ণ জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজের সমাহার। উপজেলার সাহস ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম এর ছেলে বেগুন চাষী ইমন ইসলাম জানান সে ২বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

এছাড়া খনিয়া ইউনিয়ন  সহ শত শত কৃষক জমিতে বেগুনসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ হয়েছে।  কৃষকরা তারা নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি কন্টাক নিয়ে প্রতিবছরেই বেগুন চাষসহ বিভিন্ন প্রকারের সবজি যেমন-পটল,লালশাক, মুলা শাক, লাউ শাক লাউ, কাঁচা মরিচ চাষাবাদ করে। চাষীরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। তারা অন্য বছর গুলোতে যাবতীয় খরচ মিটিয়ে এক বিঘা বেগুন ক্ষেতে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় করে। আয়ের টাকা দিয়ে তারা সচ্ছল ভাবে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন-জীবিকা করছেন।

এ দিকে বর্তমান খরিপ-২(বর্ষা মৌসুমে) বেগুনের ভাল চাষ হলেও বাজার মুল্য কম থাকা ও অতিরিক্ত খরার কারণে বেগুন ক্ষেতে ডগাছিদ্র পোঁকার আক্রমনের কারণে কৃষকরা দুচিন্তায় পড়েছেন। কৃষক ইমন  ইসলাম জানান, কৃষি অফিস থেকে সামান্য প্রশিক্ষন নিয়ে জীবিকার তাগিদে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি কৃষি কাজে। আমার প্রতি বিঘা বেগুন চাষে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। বেগুনের বাম্পার ফলন ও দাম ভাল হলে প্রতি বিঘায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বিক্রি হবে। তবে এ বছর খরিপ-২ মৌসুমে কিছু অসাধু কম্পানির  বেগুনের বীজ ভাল না থাকায় খুব বেশি ফলন দেখা যাচ্ছেনা। কিছু কিছু বেগুন ক্ষেতে ডগাছিদ্র পোঁকার আক্রমন করেছে। গাছও মরে যাচ্ছে। বেগুন গাছ বড় বড় দেখা গেলেও গাছে তেমন বেগুন নেই। বর্তমানে বেগুন ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে মন বিক্রি করছি। বেগুনের দাম না বাড়লে এ বছর কৃষকের লোকসান ঘুনতে হবে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন জানান, খরিপ-২ (বর্ষা মৌসুমে) বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বেগুনের চারা চাষ করেছে। শীত মৌসুম আস্তে আস্তে এর পরিমান ২৫০ থেকে ৩০০ হেক্টর হবে। বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষন দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় যতেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং অনেকেই স্বাবল্বী হয়েছেন। ডগাছিদ্র পোঁকা আক্রমনে উপজেলা কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে গিয়ে রোগ দমনের জন্য কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। তবে আশা করি কিছুদিন গেলে কৃষকরা বেগুনের বাজার মূল্য ভাল পাবে।


Top