সাতক্ষীরায় তালায় খেশরায় কে এস ডি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এর ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। কে এস ডি মাধ্যমিক বলিকা বিদ্যালয়টি উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের খেশরায় ১৯৮৮ সালে স্থাপিত হয়।
সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে ১ একর ৫০ শতক জমির উপর স্থাপতি হয় এ বিদ্যালয়টি। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ২১০ জন। প্রধান শিক্ষকসহ কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৪ জন। বিদ্যালয়টিতে ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ১৯৯২ সালে। বিদ্যালয়ে ভবনটির বর্তমানে বেহাল দশা।ওই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। পিলারে ফাটল ধরে বের হয়ে গেছে রড। ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে চেয়ার টেবিল, বেঞ্চ, বই খাতা ভিজে যাচ্ছে।
ওই ভবনে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে অপারগতা প্রকাশ করায় মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ের মাঠে গাছের তলায় ক্লাস নেওয়া হয়। কয়েক বছর ধরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা সম্পর্কে জানালেও কোন কাজ হয়নি।
ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাপিয়া সুলতানা জানান, আমাদের ভয়ের মধ্যে ক্লাস করতে হয়। মাঝে মাঝে ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে। আমাদের বই খাতা ভিজে যায়।একই শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান জানায়, স্কুলের ভবনের খুব খারাপ অবস্থা। কখন কি বিপদ ঘটে সে ভয়ে অস্থির থাকি। পড়াশুনায় মন দিতে পারি না।
খেশরায় ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আসলাম মালী বলেন, মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তার মধ্যে থাকি। কখন কি ঘটে যায় কে জানে। অভিভাবক রেশমা বেগম বলেন, তার দুই মেয়ে ওই বিদ্যালয়ে পড়ে। মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। বড় বিপদের মধ্যে আছি।
আরেক অভিভাবক শেখ মিজানুর রহমান বলেন, স্কুল ভবনের যে কন্ডিশন বৃষ্টি হলে কক্ষের মধ্যে ছাতা মাথায় নিয়ে বসতে হয়। শিক্ষকদের এ ব্যাপারে অনেক বলেছি কিন্তু কোন ফল পাচ্ছি না। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) সাধন দাশ বলেন, বিদ্যালয় ভবনের দুরবস্থার কথা জানিয়ে বহুবার চিঠি দিয়েছি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিজে এসে দেখে গেছেন তাছাড়া মাননীয় সংসদ সদস্য এ অবস্থা দেখে নিজে ইজ্ঞিনিয়ার পাঠানোর আশ্বাস দিলেও সেটি আশ্বাস হিসেবেই রয়ে গেছে। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে শিক্ষা অফিসের লোকজন এসে ভবনের ছবি তুলে নিয়ে যান, কিন্তু ওই পর্যন্তই কোন ফলাফল আমরা পাইনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেন, ওই বিদ্যালয়ের ভবনের ব্যাপারে একাধিকবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি।
তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় ও আমার কার্যালয় থেকেও আবেদন জানানো হয়েছে কিন্তু এ ব্যাপারে আমার কোন উদ্যোগের কথা জানতে পারিনি।