খুলনায় করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। বর্তমানে জেলায় করোনা পজেটিভ রোগীর রোগীর সংখ্যা সহস্রাধিকের বেশি এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। খুলনার একমাত্র ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে (ডায়াবেটিকস হাসপাতাল) সম্প্রতি রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেনেরও ব্যবস্থা নেই। এদিকে, করোনা রোগীর বৃদ্ধিতে পরিস্থিতি মোকাবেলায় খুলনায় আরও একটি করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের জন্য একটি হাই-ফ্লো অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোল ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, নগরীর নূরনগর ডায়বেটিকস হাসপাতালটিকে খুলনার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাসপাতালটিতে জেনারেল বেড রয়েছে ১০০টি এবং আইসিইউয়ের ব্যবস্থা আছে ১০টি বেডের। ঈদের আগে ২/৩ জন ভর্তি থাকলেও বর্তমানে অর্ধশতাধিক রোগী রয়েছে। যার মধ্যে ৬ জন আইসিইউতে। করোনা পজেটিভ রোগীদের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে যা সরবরাহের জন্য লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করা দরকার। কিন্তু দীর্ঘদিনেও হাসপাতালটিতে সেটা স্থাপন করা হয়নি। অন্যদিকে আইসিইউতে ৬ জন রোগীকে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে এবং সাধারণ বেডের রোগীদের জন্য ৩৫টি ছোট অক্সিজেন মজুদ আছে।
এদিকে খুলনা জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভায় গত সোমবার নতুন করে খুলনায় ৪২ বেডের আরও একটি করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ৪র্থ তলায় স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের (ডায়াবেটিকস হাসপাতাল) জন্য খুব দ্রুত হাইফ্লো অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোল ক্রয় করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের (ডায়াবেটিকস হাসপাতাল) ফোকাল পার্সন ডাঃ শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে প্রায় অর্ধশতাধিক করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি রয়েছেন। অক্সিজেনের পরিমাণ যা আছে তা দিয়ে সামাল দেওয়া যাচ্ছে। তবে রোগী আরও বেড়ে গেলে সমস্যা হবে। তিনি বলেন, বড় সিলিন্ডার রয়েছে ২৭টি। যা পাইপ লাইনের মাধ্যমে আইসিইউতে কাজে লাগানো হচ্ছে। সেখানে ৬ জন রোগী রয়েছে। এছাড়া ১০০ বেডের জন্য ৩৫ টি সিল্ডিডার রয়েছে। তিনি দাবি করেন, খুলনার যে অবস্থা তাতে খুব দ্রুতই হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করতে হবে। এতে করে আইসিইউসহ জেনারেল বেডের রোগীদেরও সাপোর্ট দেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে হাইফ্লো অক্সিজেনের সংকটও কমবে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার জানান, করোনা ফ্লু কর্ণারসহ খুমেকের অন্যান্য বিভাগে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে খুমেক হাসপাতালে ৪৫০টি ছোট, ১৫টি বড় এবং সম্প্রতি অক্সিজেন সরবরাহকারীদের নিকট থেকে ২০টা অক্সিজেন লোন করা হয়েছে। এখন যা আছে তা যথেষ্ট নয়। কারণ রোগীর চাপ বেড়ে গেলেই সংকট সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, করোনা ডেটিকেটেড হাসপাতালের জন্য খুব দ্রুত একটি হাইফ্লো অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোল ক্রয় করা হবে। সূত্র : সময়ের খবর