ডা: আসাদুল্লাহিল গালিব। খুলনা মেডিকেল কলেজের সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। অত্যন্ত সদালাপী একজন চিকিৎসক। নিরহংকারও বটে। নমুনা পরীক্ষার পর গত ৬ জুন করোনাভাইরাস পজেটিভ রিপোর্ট আসে। একইভাবে আক্রান্ত হন তার স্ত্রী ডা: মাকসুদা খানম, কন্যা তারান্নুম গালিব এবং খালা কমলা বেগম। একই পরিবারের চারজন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলেও মোটেই মনোবল হারাননি তিনি। বাসায় বসেই হোম আইসোলেশনে থেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আজ তার দ্বিতীয় নমুনা দেয়া হবে। তিনি আশা করছেন হয়ত রিপোর্ট নেগেটিভ হবে। কেননা তার শরীর এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল।
কিভাবে করোনা থেকে সুস্থতার পথে আসলেন ডা: গালিব তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আজকের প্রতিবেদন। দৈনিক পূর্বাঞ্চলের এ প্রতিবেদকের সাথে তার ফোনালাপে গতকাল তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তার অবস্থা ছিল সবচেয়ে খারাপ। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন তিনি। ভেন্টিলেটর ছাড়া চিকিৎসার সব সাপোর্টই নিয়েছেন। তৃতীয় দিন মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। সেচুরেশন কমে যাওয়ায় মাঝে মাঝে অক্সিজেন নিচ্ছিলেন। জিহ্বাটা মনে হচ্ছিল তার না। একটু স্বস্তি পাবার জন্য হাঁসফাঁস করছিলেন। এরই মাঝে একবার আধা মগ পানি গরম করে মগের মুখে হাত দিয়ে নাক মুখ দিয়ে যতটুকু সম্ভব গরম ভাপ নিতে থাকেন। পানি একটু ঠান্ডা হয়ে আসলে চায়ের মত ধীরে ধীরে সময় নিয়ে পান করতে থাকেন। এক পর্যায়ে লক্ষ্য করলেন শ্বাসকষ্ট কমে যাচ্ছে এবং জিহ্বায় স্বাদও ফিরে আসছে। এভাবে ঘন্টা খানেক শ্বাসকষ্ট কম থাকছে জিহ্বার স্বাদও বজায় থাকছে। খেতেও পারছেন। এরপর থেকে তিনি এবং বাসার অন্য সবাই এক ঘন্টা পরপর ভাপ নিতে থাকেন। একইভাবে গরম পানিও খেতে থাকেন।
ডা: গালিব বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে তার এবং তার স্ত্রী ডাঃ মাকসুদার অবজারভেশনে হচ্ছে গরম পানির ভাপ নেয়া ও খাওয়ার ফলে মুখ, নাক ও শ্বাসতন্ত্রে (রেসপ্রিয়েটরী সিষ্টেমে) ভাইরাসের মাত্রা বা ভাইরাল লোড কমে যায়। করোনাভাইরাস হয়তো কারো কারো নাক, মুখ ও শ্বাসতন্ত্রে থাকে। ফলে তারা স্বস্তি পায়। হয়তো সংক্রমণ বা অসুস্থতা থেকেও মুক্তি পায়।
অবশ্য করোনাকালের লকডাউনসহ নানা কারণেই তারা সবাই যেহেতু বাসায় অবস্থান করছেন সেহেতু বসে বসে কি আর করার যার কাছে যা শুনছেন তাই করছেন। নানারকম টোটকা চিকিৎসাও নেন।
করোনাকালীন শিক্ষার কথা তুলে ধরে ডা: গালিব বলেন, তারা এখন যেমন সবাই হাত ধুচ্ছেন বা হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করছেন ঠিক একইভাবে সারা দেশের সবাই যদি এক নাগাড়ে ১৪দিন এক ঘন্টা পরপর গরম ভাপ নেন এবং গরম পানি খান তাহলে এই মহামারী থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন মাত্রা যোগ হতে পারে।