মহামারি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার বিষয়টি গুজব। যা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে এমন ভুয়া তথ্য প্রচার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই গুজবে বিশ্বাস করে গত শনিবার (৬ মার্চ) দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢল নেমেছিল। ফটোকপি ও অনলাইন সার্ভিসের দোকানগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়।
প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের প্রত্যয়নপত্র নিতে দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় যান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এমনকি সারাদেশ থেকে আবেদনের জন্য রাজধানীসহ নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে এসেছেন রাজধানীতে অবস্থান না করা শিক্ষার্থীরাও।
এদিকে, অনুদান নিয়ে প্রতারণা এড়াতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সতর্কবার্তা জারি করেছে।
আজ রোববার (৭ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের সংশোধিত নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনে (www.shed.gov.bd) আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আজকে আবেদনের শেষ দিন। তবে কর্তৃপক্ষ আবেদনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করছে। আবেদন যাচাই-বাছাই করে সীমিত সংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অনুদানে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি সর্তকতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সরকারের দেওয়া বিশেষ অনুদান প্রদানের নামে অনলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারক চক্র ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন ইত্যাদি চাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে ফোনগুলো করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান বিষয়ে কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন সংক্রান্ত কোনো তথ্যও চাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ ছিল না। তাছাড়া নীতিমালা ও শর্ত অনুসারে সবাই আবেদনের যোগ্যও না। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়েছে সবাইকে অনুদান দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা করে। সেই গুজবের রেশ ধরে গতকাল শনিবার (৬ মার্চ) গাইবান্ধা সরকারি জাতীয় কলেজে প্রত্যয়নপত্র নিতে ভিড় করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।