করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দুই মাসেরও বেশী সময় ধরে বন্ধ রয়েছে খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর সব কিছু থমকে গেছে। এর ফলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটির কাজ শেষ হচ্ছে না। এ জন্য প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে। ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং বৃষ্টি শেষ হলেই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।
প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইনের দৈর্ঘ্য হবে ৬৫ কিলোমিটার। শুধুমাত্র রেল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। এই রেলপথে স্টেশন থাকবে ৮টি। ইতোমধ্যে খুলনা ও বাগেরহাটে ৭৫১ একর জমি অধিগ্রহণের পর মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রেলপাটি বসানোর জন্য বেড তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রকল্প এলাকায় কিছু দিন আগে পাথর, কনক্রিটের স্লিপার ও রেলপাটিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম আনা হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে থমকে রয়েছে প্রকল্পের সব কাজ। ভারত থেকে প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জাম আনা যাচ্ছে না।
খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, সম্পূর্ণ প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের রেল সেতু অংশের ৬৮ শতাংশ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর রেল লাইন নির্মাণ কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ হয়েছে। করোনার কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণেও কাজ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের (২০২০) ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিলো। তবে করোনার কারণে কাজ বন্ধ থাকায় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্যয় বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। তবে মেয়াদ ও ব্যয় বাড়বে কিনা কাজ শুরু না হলে এখনই বলা যাচ্ছে না।
খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসাইন মাসুম বলেন, কাজের সাইটে বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকলেও গত প্রায় ২ মাস ধরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে গার্ডার তৈরি করা হচ্ছে, সেই ফ্যাক্টরিগুলো রেড জোনে পড়েছে। সেখানে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
তিনি জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দর থেকে সহজে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহন করা যাবে। এছাড়া ভারত, নেপাল ও ভুটান এই রেলপথ ব্যবহার করবে। এর ফলে মোংলা বন্দর আরও গতিশীল হবে।