করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ১১ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ২৫ জুন (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ১৫ দিনের জন্য খুলনার দোকানপাট, শপিংমল, যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ চলছে।
খুলনা জেলা প্রশাসনের দেওয়া এ বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে খুলনার ফুলবাড়ীগেট বাজারে চায়ের দোকানে বেবী টেক্সি ইউনিয়নের নেতা রওশন দলবল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। পুলিশ আড্ডা বন্ধ করে দেওয়ায় সংগঠিত হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে ডিম নিক্ষেপ করেন তারা।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কমকর্তাদের সঙ্গে বাজার বণিক সমিতির বৈঠক শেষে করোনা পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান বাদে চা, ভাঙারির দোকানসহ ফুটপাতের সব দোকান বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সোমবার (২২ জুন) দুপুরে ফুলবাড়ীগেট বাজারের রেললাইনের পাশে ফারুক সরদারের চায়ের দোকানে বেবী টেক্সি ইউনিয়নের নেতা রওশন দলবল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে ফুলবাড়ীগেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বিধান চন্দ্র সানা সঙ্গীয় ফোঁস নিয়ে চায়ের দোকান থেকে তাদের বের করে দেয়। এ সময় রওশন, ফারুক, পাশের ভাঙারির দোকানদারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে তারা সংগঠিত হয়ে বাজারের মধ্যে এসআই বিধানের ওপর চড়াও হয়ে ডিম নিক্ষেপ করেন। উত্তেজনা বাড়লে এসআই বিধান তাৎক্ষণিক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। ঘটনার পরই দৌলতপুর জোনের এসি সহকারী পুলিশ কমিশনার বায়জিত ইবনে আকবর, খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বিষয়টি নিয়ে পরে ফুলবাড়ীগেট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বেগ লিয়াকত আলীর অফিসে তারা বৈঠক করেন। দেশের এ ক্রান্তিকালে সামনের সারিতে থেকে যারা কাজ করছে তাদের সঙ্গে এমন আচারণ করার জন্য বাজার বণিক সমিতি সভাপতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা অন্যায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে পরবর্তীতে এমন ঘটনা আর ঘটবেন না বলে আশ্বস্ত করেন।
এ ব্যাপারে এসআই বিধান চন্দ্র সানা বলেন, রেললাইনের পাশে ফারুকের চায়ের দোকানে বেবী টেক্সি ইউনিয়নের নেতা রওশন ১০ থেকে ১৫ জন নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। তাদের নিষেধ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। তারা সংগঠিত হয়ে বাজারের মধ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ফুলবাড়ীগেট বাজারের ওপর যেহেতু পুলিশ ফাঁড়ি তাই সরকারি নির্দেশনা শারীরিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমাদের দায়িত্ব একটু বেশি। দেশের এ ক্রান্তিকালে পরিবার পরিজন ফেলে করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে দেশের মানুষকে সচেতন করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষায় তাদের স্বার্থে আমরা নিজেদের জীবনবাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে সেখানে এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
ফুলবাড়ীগেট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বেগ লিয়াকত আলী বলেন, ফুলবাড়ীগেট বাজারে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি বণিক সমিতি কঠোরভাবে প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছে। এর মধ্যে অনাকাঙ্খিত এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচাবাজার, মৌসুমী ফলের দোকান ও ফার্মেসি ব্যতীত অন্যান্য দোকানপাট, শপিংমল ও ফুটপাতের দোকান বন্ধ থাকবে। এ সব দোকান খুললে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে এর কোনো দায় বাজার বণিক সমিতি নেবে না।